আপনি যখন বক্সিং শব্দটি শুনবেন, তখন অনেকেই মুহাম্মদ আলী এবং জো ফ্রেজিয়ার মতো কিংবদন্তিদের শ্বাসরুদ্ধকর বক্সিং লড়াইয়ের কথা ভাববেন। কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন হল বক্সিং ডে আসলে কি? বক্সিং ডে মূলত ক্রিসমাসের পরের দিনকে বুঝায়। অর্থাৎ ২৬শে ডিসেম্বর। সক্ষম খ্রিস্টানরা দরিদ্র ও অভাবীদের মধ্যে বক্স বা বাক্সে ভরে বিভিন্ন উপহার এবং অর্থ বিতরণ করত। তাই ঐতিহ্যগত ভাবে ২৬শে ডিসেম্বর বক্সিং ডে হিসাবে পালন করা হয়।
বক্সিং ডে’র অর্থ হল বাক্সে মোড়িয়ে অন্যকে উপহার দেওয়া। বাক্সের মধ্যে উপহার দেওয়ার কারণে এটি বক্সিং ডে নামে পরিচিত হয়েছে। সাধারণত এই দিনে যে ফুটবল বা ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় তাকে বক্সিং ডে ম্যাচ বলা হয়। ২০২৩ সালের বক্সিং ডে’তে আজ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এবং ভারত একই দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট খেলবে। এই দুটি ম্যাচকে বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচ বলা হয়।
আরো পড়ুন: ২০২৩ সালে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে বেশি রান করেছেন যারা
আপনি যদি বক্সিং ডে সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আপনাকে ১৫০ বছর পিছনে যেতে হবে। ‘বক্সিং ডে’ শব্দটি উনিশ শতকে উদ্ভূত হয়েছিল রানী ভিক্টোরিয়ার রাজত্বকালে। বড়দিন উপলক্ষে ব্রিটেনে উপহার দেওয়ার নিয়ম রীতি চালু ছিল। তাই প্রতি বছর ২৫শে ডিসেম্বরের পরের দিন উৎসবের মেজাজে বাক্সটি খোলা হত।
শুধু উপহারই নয়, ধনীরা ২৬শে ডিসেম্বর দরিদ্রদের হাতে বাক্সে ভরে ছোট ছোট অনুদান তুলে দিতেন। সেখান থেকে দিনটি ‘বক্সিং ডে’ নামে পরিচিত হয়। আবার স্পেন ও আয়ারল্যান্ডে এই একই দিনের আলাদা ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে। সেখানে ২৬শে ডিসেম্বর ‘সেন্ট স্টিফেনস ডে’ হিসাবে পালিত হয়।
মধ্যযুগেও এই দিনটি পালন করা হত। সেই সময় অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দিনটি উপলক্ষে অন্যান্য কর্মচারীদের বক্সে ভরে বিভিন্ন উপহার দিতেন। ধনীরা গরীবদের এবং অফিসের ঊর্ধ্বতনরা জুনিয়রদের উপহার দেয়ার রীতি থেকে শিশুদের উপহার দেয়ার রীতি ব্যাপক সাড়া ফেলে। এই উপহার প্রদানের রীতি এখনও সেইসব দেশে প্রচলিত আছে।